রোলস রয়েস সোয়াপটেইল: হাতের স্পর্শে গড়া বিশ্বের সবচাইতে দামি গাড়ি!
Published Tue 18th December 2018
যদি জিজ্ঞেস করা হয়, জীবনে যত গাড়ি দেখেছেন তার মধ্যে সবচাইতে দামি গাড়ি কোনটি? ফেরারি? মার্সিডিজ বেঞ্জ? ম্যাকলারেন? নাকি বুগাত্তি ভেরন? একেকজন হয়ত একেক ধরণের উত্তর দিয়ে থাকবেন। কিন্তু বর্তমানে পৃথিবীর বুকে যত গাড়ি আছে তার মধ্যে সবচাইতে দামি গাড়িটি হচ্ছে রোলস রয়েসের সোয়াপটেইল।
ব্রিটিশ কোম্পানি রোলস রয়েসের এই গাড়িটির বর্তমান দাম প্রায় ১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। টাকার অংকে যেটা প্রায় ১২৫ কোটি টাকা! এই টাকা দিয়ে একটি পঁচিশ ক্যারেটের নীল এটারনিটি ডায়মন্ড কেনা সম্ভব। বা এই একটি গাড়ির মূল্য দিয়েই কেনা সম্ভব একটি করে ফেরারি, বুগাত্তি ও ম্যাকলারেন।
কার জন্য তৈরি হয়েছে এই দামি গাড়ি?
গাড়িটি দেখতে চাকার উপরে একটি প্রাইভেট মিনি ইয়োটের (ব্যক্তিগত জাহাজ) মতই সুন্দর এবং কারুকার্যপূর্ণ। রোলস রয়েস কোম্পানি থেকে বলা হয়েছে, একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্রেতার জন্যই এই গাড়ির একটি মাত্র সংস্করণ তৈরি করেছিল এই বিখ্যাত গাড়ি কোম্পানিটি। এবং এটিই পৃথিবীতে বিক্রি হওয়া সবচাইতে দামি গাড়ি। তবে ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত সুত্র অনুসারে জানা যায় গাড়িটি বিলিয়নিয়ার টাক স্যামি লি’র ৭ সন্তানের একজন স্যাম লি’র জন্য তৈরি করেছে রোলস রয়েস। স্যামি লি একজন গাড়ি প্রেমিক এবং তার কাছে বিখ্যাত সব গাড়ি এবং দামি গাড়ির একটি সংগ্রহশালা রয়েছে। মূলত তিনিই কাস্টম অর্ডার দিয়ে নিজের চাহিদা অনুসারে গাড়িটি বানানোর জন্য অর্ডার দিয়েছিলেন রোলস রয়েসকে।
গাড়ির নাম কেন সোয়াপটেইল?
রোলস রয়েস অটোমোবাইল কোম্পানিটি এমনিতেই গাড়ির কৌশলগত দিকে খুব বেশি মনোযোগী। গাড়ির নকশা তৈরির দিকেও তারা বেশ যত্নশীল। আর যেহেতু গাড়িটি ধনী এবং গাড়ি সংগ্রাহক একজন ক্রেতার তৈরি করা হয়েছিল, তাই গাড়িটি নকশা করার সময় তার চাহিদা এবং নির্দেশের প্রতিও খেয়াল রাখতে হয়েছে । বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিককার রোলস রয়েসের নকশার প্রভাব রয়েছে এই গাড়িটিতে। রোলস রয়েস ফ্যান্টম মডেলের আদলে তৈরি এই গাড়ির পেছন দিকটি একটু সরু হয়ে জাহাজের আঁকার ধারণ করেছে বলেই এই গাড়িটির নাম দেয়া হয়েছে সোয়াপটেইল!
কেন এটি সবচাইতে দামি গাড়ি!
এই রোলস রয়েস সোয়াপটেইল গাড়ির মাত্র একটি সংস্করণই তৈরি করা হয়েছে। গাড়ির বাজারে এই মডেলের আর কোন গাড়ি নেই। এই একটি মাত্র গাড়ি তৈরি করতে রোলস রয়েস কোম্পানি পুরো একটি গাড়ি নির্মাতা দলকে নিয়োগ দিয়েছিল। এই গাড়ির প্রতিটি অংশ ইউনিক ডিজাইন এবং নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে তৈরি। একমাত্র ক্রেতার চাহিদা অনুসারে এই গাড়িতে রয়েছে একটি প্যানরোমা টাইপ ছাদ। ফলে গাড়িটিকে উপর থেকে দেখতে নৌকার মতো দেখা যায়। এবং ভেতর থেকে যেদিকেই তাকান না কেন সেদিকেই বাইরে দেখা যাবে সবকিছু।
গাড়ির সামনের অংশে যেই গ্রিলটি দেয়া হয়েছে সেটি তৈরি করতে কোন প্রকার পরিমাপক স্কেল ব্যবহার করা হয়নি। সম্পূর্ণ হাতে তৈরি করা হয়েছে এই গ্রিলটি। গ্রিলের প্রতিটি রড তৈরি করতে একজন মানুষের একদিন করে সময়ে লেগেছে আর এটিকে পলিশ করতে সময় লেগেছে প্রায় পাঁচ ঘন্টা করে।
গাড়ির ভেতরে যেই লেদার এর ইন্টেরিয়র ডিজাইনে ব্যবহার করা হয়েছে সেই লেদার কেবল শীতপ্রধান দেশের এক ধরণের বিশেষ ষাঁড়ের চামড়া থেকে তৈরি। রোলস রয়েস গাড়ির লেদারের জন্য শুধুমাত্র সেইসব ষাঁড়ের চামড়া ব্যবহার করে, যেগুলো খাবার জন্য জবাই করা হয়ে থাকে। সেই চামড়া তারা নিজেদের কার প্লান্টে প্রক্রিয়াজাত করে লেদার তৈরি করে এবং গাড়িতে ব্যবহার করে থাকে। সোয়াপটেইল গাড়ির চেসিস ফ্রেম প্রথমে জার্মানিতে তৈরি করা হয়েছিল। এরপর এটিকে সোয়াপটেইলের জন্মস্থান ইংল্যান্ডের গুডউড প্লান্টে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল ফিনিশিং এর জন্য।
এতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ ধরনের ইবনি এবং পালদাও প্রজাতির কাঠ। গাড়ির ইন্টেরিয়রে যেই কাঠের পাতাটনগুলো ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো রোলস রয়েসের কর্মীরা নিজের হাতে কেটে এবং ডিজাইন করে গাড়ির জন্য প্রস্তুত করে থাকেন। এইসব কাজে রোলস রয়েস কখনোই রোবটের শরণাপন্ন হয় না।
গাড়িটি রঙ করতে প্রায় ৫ ধাপে ২২ টি লেয়ারে রঙ করতে হয়। গাড়িটি রঙ করতে প্রয়োজন পড়ে বিশেষ ধরনের রঙ এবং পরিমাণে প্রায় ৪৫ কেজি রঙ ব্যবহার করে গাড়ির রঙ করার কাজটি করতে হয়ে। রঙ করার কাজটিও করা হয়ে মানুষের হাতেই। রঙ করার পর গাড়ির পলিশিং কাজটিও হয় মানুষের সুনিপুণ হাতের ছোঁয়ায়!
গাড়ির ইন্টেরিয়র ডিজাইন করেছেন রোলস রয়েসের বিখ্যাত ডিজাইনারগণ। গাড়ির ভেতরের আবহ এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন গাড়িটিতে চড়লে মনেহয় যাত্রী কোন ব্যক্তিগত ইয়োটের মধ্যে বসে আছেন। এবং ইয়োট চলছে রাজপথে। বেশ একটা রাজকীয় ব্যাপার রয়েছে এই গাড়ির ইন্টেরিয়রে। ইন্টেরিয়রের এমনকি পুরো গাড়ির প্রতিটি স্ক্রু লাগাতেও কোন স্বয়ংক্রিয় রোবটের সাহায্য নেয়া হয়নি। একটি একটি করে প্রতিটি স্ক্রু লাগাতে এবং টাইট দিতে দিন রাত খেটেছেন রোলস রয়েসের কর্মীরা!
এই একটি মাত্র গাড়ির জন্য ডিজাইন, কৌশলগত বিকাশ, তৈরি, পরীক্ষণ সব মিলিয়ে রোলস রয়েসের লেগেছে প্রায় চার বছর! চার বছর একটু একটু করে একটি গাড়ি, সম্পূর্ণ তৈরি হয়েছে মানুষের হাতে। তাই গাড়ির মান যেমন উন্নত তেমনি সুন্দর!
ভাবছেন এত দামি গাড়ি! চিন্তা করছেন এত দামের এই গাড়ি চুরি হয়ে গেলে? বিদেশে গাড়ি চুরির ভয় যেমন আছে তেমনি রয়েছে চুরি ঠেকানোর প্রযুক্তিও। ভেইকেল ট্র্যাকিং সিস্টেম (ভিটিএস) এর মাধ্যমে জিপিএস সিগন্যাল ব্যবহার করে সহজেই গাড়ি ট্র্যাক করা যায়। শুধু যে বিদেশিরাই ভিটিএস ব্যবহার করে তা নয়। বাংলাদেশেও রয়েছে ভিটিএস বা ভেইকেল ট্র্যাকিং সার্ভিস। প্রহরী ভিটিএস তাদের মধ্যে অন্যতম। রোলস রয়েস সোয়াপটেইলের মতো প্রহরী ভেইকেল ট্র্যাকিং সিস্টেম ডিভাইসটি তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের নিজেদের প্রযুক্তিতে নিজেদের গবেষণায়। এবং দেশের গাড়ি ড্রাইভার এবং মালিকদের নানা রকম সমস্যার কথা মাথায় রেখেই। গাড়িতে প্রহরী থাকলে গাড়ি যতই দামি হোক, চুরির ভয় তো থাকবেই না, গাড়ির সব খবরাখবর থাকবে আপনারই হাতের মুঠোয়।
-
Cân Joci Ruletă Online Pe crystal ball slot online cazinou Bani Reali Deasupra România
-
Vip Ports Online With no Down load Play Best Vipslots Online
-
Pacanele Degeaba, Joaca 800 50 rotiri gratuite Wild Respin + Jocuri Pacanele Geab 77777
-
10 "best" Online Casinos Slot reel rush February Real Money Gambling